
তারেক রহমানের ৩১ দফাই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালনার ভিত্তি: মাদারীপুরে হেলেন জেরিন খান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ কর্মসূচি কোনো সাধারণ কাগজের টুকরো নয়, বরং এটিই ‘আগামীর বাংলাদেশ’ পরিচালনার ভিত্তি। এই ৩১ দফার মাধ্যমেই দেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে।
শুক্রবার বিকেলে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের একটি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান এসব কথা বলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে ৩১ দফা জাতির সামনে তুলে ধরেছেন, তা কেবল একটি রাজনৈতিক ইশতেহার নয়। এটি বাংলাদেশের আগামী দিনের পথরেখা, একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট রূপকল্প। যখনই বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে, এই ৩১ দফার ভিত্তিতেই দেশের প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো পরিচালিত হবে।”
‘৩১ দফা: অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক অধিকারের সনদ’
জনসভায় হেলেন জেরিন খান তার বক্তৃতায় তারেক রহমানের ৩১ দফার মূল লক্ষ্যগুলো তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই রূপরেখায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব এবং লাগামহীন দুর্নীতির জাঁতাকলে পিষ্ট। জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানের এই ৩১ দফা জনগণের সেই অর্থনৈতিক দুর্ভোগ ঘোচানোর অঙ্গীকার। এর প্রতিটি দফায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, নারী ও যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।”
হেলেন জেরিন খান আরও বলেন, “বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এবং একদলীয় শাসন কায়েম করে কোনো দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই ৩১ দফার প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।” তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই কর্মসূচির বার্তা দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে যে এই রূপরেখাই দেশকে বর্তমান সংকট থেকে মুক্তির পথ দেখাবে।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস ও সংহতি
পাঁচখোলা ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান হাবুল রাঢ়ীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই জনসভা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। বক্তাদের বক্তব্যে তারেক রহমানের প্রতি আস্থা ও দলের প্রতি সংহতি প্রকাশ পায়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সোহবার হোসেন হাওলাদার, যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট জামিনুর হোসেন মিঠু, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব ওহিদুজ্জামান খান অহিদ, ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম রফিক সহ স্থানীয় পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতা ও কর্মী।
বক্তারা বলেন, কেন্দ্র থেকে ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ পুরোদমে চলছে। দেশের প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ এই পরিবর্তনের রূপরেখাকে স্বাগত জানাচ্ছে। তারা আরও বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেকোনো পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ে রাজপথে তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
জনসভায় উপস্থিতির সংখ্যা ও নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে যে, তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচিকে সামনে রেখে মাদারীপুরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে এবং তারা জনগণের কাছে দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

Reporter Name 